প্রশ্নাতীত আলাপচারিতা
[অ
ছ্যার, বডি পাওয়া গেছে? ছ্যার গো, বডি না পেলি ট্যাকা দেওনা নাকি ছ্যার? ]
আপেলে পচন
ধরলে যেমন গন্ধ হয়। ঠিক বলেছি?
চলবে...। এবার বলো,
তুমি লাস্ট কবে প্রকাশ্য সমাবেশে গেছ?
এ আবার কী কথা। একবার
জানতে চাচ্ছ মদের গন্ধ কেমন একবার বলছ মিটিঙে গেছি কবে, এ আবার কেমন আলাপ চলছে
বুঝছি না তো!
প্রেক্ষাপট কী সেটা তো
আঁচ করতে অসুবিধে নেই, নাকি?
এক্কেবারে না বলতে পারছি
না। তবে তোমার কোথাও ভুলও তো হতে পারে। যেমন
দিকে যাচ্ছ ভাবছ আমাকে নিয়ে, বা আমি যেদিকে যেতে পারি তোমার গাইড হয়ে বলে
আশায় বুক বেঁধেছ, সেটা দেখা গেল পুরোটাই ফলস্ বেরোলো শেষে! এমন হতে পারে না?
না হবার চান্সই বেশি।
পাক্কা সবুত হাতে নিয়ে তবেই মাঠে নেবেছি ভায়া...
নেবেছি? নেবেছিটা আবার
কোন ভাষার ইয়ে গো, শব্দ?
শোনোনি?
না তো!
বাংলা। নানা রূপান্তরে।
ম>ব ।
তাহলে কি মামা>বাবা?
না, তা কেন। ওটা শব্দের
মাঝখানে ‘ম’ থাকলে তবে এই নিয়ম খাটে...
আচ্ছা বেশ। মাঝখানে ‘ম’
আলা আরেকটা ‘ব’ হওয়া দেখাও দেখি!
আছে, অনেক আছে। ইয়ে
ঘেঁটে দেখ, সুকুমার। হ্যাঁ, সেন নাতো আবার কে!
ঘুঘুর এক্কেরে পাক্কা
এডিশন মাইরি। পেটে পেটে অবিদ্যা ভরা!
কী বললি? অবিদ্যা? অ্যাঁ?
দাঁড়া মাইরি, পায়ের ধুলো দিয়ে যা।
কেন? এ আবার একটা নতুন
কী ফ্যাকড়া বাধালে বাবু? পায়ের ধুলো মানে?
আরে, ‘অবিদ্যা’ বললি না?
তলে তলে তন্ত্র সাধনা হয় বুঝি?
কারণে অকারণে বিনা কারণে
এ এ এ এ এ এ এ ...
আহা, হোক হোক –
মারণে তারণে মন উচাটনে
রে এ এ এ এ এ এ এ ...
ক্যা বাত! হোক হোক –
তু মুহু চুম্বি কমল রস
পীবমি ই ই ই ই ই ই ই ...
যাঃ ঝাড় কে! বাঃ বাঃ !
জয় মা ! চামুন্ডে!
কথা হচ্ছে, পাক্কা সবুত হাতে নিয়ে এসে মাইরি, শেষে, কারণ আর অকারণ নিয়ে একটা জগঝম্প বাধাবে নাকি
? কী? বাবুমশায়? ঘুষ-খোরির দায়ে পড়বে যে গুরু!
আরে ছাড়। শালা কত কেজি সোনা বেরোলো আইপিএসের ডেরা থেকে দেখলি না? তেমন হলে নতুন পার্টি জয়েন করে নিব। কেন্দ্রে বিপরীত ক্ষমতা চলছে…
আচ্ছা জানো তো, ওই সোনা কেসটা আমার না সাজানো মনে হয়। না?
বাদ দে বাল। জাহাজের খবর নিয়ে কী মারাবি, অ্যাঁ?
না, তা নয়… আসলে তোমার হলো
গিয়ে…
ধুস্! বেশি গাঁড়পিঁয়াজি দেখাস না তো। যাক গে, বল এবার,
ফুটফুটে মিটিঙে ছোঁক ছোঁক করতে কবার গেছ? আর দুই,
চোলাই বেচা টাকা মুখোশধারীদের কেন সাপ্লাই করো? নাও, বলো?
কী রে বাবা, এখুনি কেমন ঘাড়ে হাত রেখে কথা কইছিলে না?
আবার মাথায় বদ বুদ্ধি চাগাড় দিল কেন গো বাবুমশায়? তুমি কি ভাবছ তোমার দশটা মাথা আছে নাকি! আর এটাও কি ভাবছ
যে কেউ নজর রাখছে না তোমার হারামিপনায়?
নে তবে, একটা কব্তে আওড়া দিকি –
আচ্ছা বেশ। … ইচিং বিচিং থুড়ি
/ খাও না চপ মুড়ি …
হুই! এটা কব্তে বাঁড়া? অ্যাঁ?
বটে তো, আমি হাগলে ‘গু’
আর উনি হাগলে ‘মল’। তাই না?
বাদ দে। থাম। চেপে যা। চাকরি খাবি নাকি। আচ্ছা বল, মদ বেচা টাকায় কতগুল অস্ত্র কিনে কতবার কতজাগায়
সাপ্লাই দিয়েছিস?
এক কাজ করো না, ইয়াব্বড় একখানা রাবার স্ট্যাম্প বানিয়ে রাখ,
আর যে মানুষটা তোমার পাছায় তেল মারবে না, তার পিঠে
ওই স্ট্যাম্প খানা জুত করে ঠুকে দিও –
কিসের স্ট্যাম্প রে শালা
ইয়ে, বিমূর্তবাদী!
এমন কিছু না, বুঝতে পারছ তুমিও, স্ট্যাম্পটার
নাম ‘ম্যাও ম্যাও/মিউ মিউ’! স্রয়েডিংগারের
বেড়াল আরকি…
তাই? বেড়ে কথা ফুটেছে দেখছি?
ওই আরকি। সে বেড়াল, হুঁ হুঁ
বাবা, ধরো একটা ঝুড়ি চাপা দেওয়া আছে। ঠিক তো? ঢাকা খোলার
আগে তুমি জানই না যে সেটা ঝুড়ির তলে আছে কি নেই। অর্থাৎ একই সাথে সে আছে আবার নেইও। ঝুড়ি তোলার আগে তুমি হলফ করে কিছু বলতে চাইলে তোমার কথা এখন
অবাস্তব আর তোমাকে কাণ্ডজ্ঞানহীন ভাবা হবে।
তুই আমাকে জ্ঞান দিবি রে? জানিস আমি কত ইয়ে কষা লোক, আট-ঘাট? নিশ্ছিদ্র?
[অ
ছ্যার, বডি পাওয়া গেছে? ছ্যার গো, বডি না পেলি ট্যাকা দেওনা নাকি ছ্যার? আমার
ছেইল্যাটার পরনে নীল জামা আর সাদা পাজামা ছিল ছ্যার, বানিয়ে বলচিনিকো ট্যাকার
লুভে, বডি কি সত্যই পাননি গো? ]
ওই গানটা শুনেছ, ‘ভব পারে যাবার লা(গি)…জয়নাল ফকিরে নিল ফেনী খালে না(উ)?
কোথায় পেলি?
এমনিতে মাঠে-ঘাটে ঘুরলেই পাওয়া যায়। তুমি তো সে পথে নেই, তাহলে এক কাজ কোরো, দীনবন্ধু মিত্রের বই-পত্র একটু উল্টে দেখো…
বেশ দেখা যাবে। এখন বল, ফেনী আবার
কী?
যাহ্ রে বাপ। আরে ফেনী গো ফেনী, বাংলাদেশের জেলা। যাক বুঝেছি, এ তোমার ধাতে সইবে না। অন্য গান শোনাই –
থাম থাম। ওই যে গান খানা শোনালি, সেটা নিশ্চয়ই তোদের কোনও কোড?
তা বলতে পার…
তবে ডি-কোড কর এখনই। আমার প্রমোশন পাক্কা!
আমি মনে হচ্ছে তোমার প্রমোশনের
ঠিকা নিয়ে বসে আছি!
বলবি না তো? দেগে দিব বলে রাখছি কিন্তু। এক্কেবারে ঝঁঝরা করে দিব শালা!
দাও দাও, তবে তো আমারও প্রমোশন হয়। এক লাফে এরিয়া কমাণ্ডার হয়ে যাব গুরু!
আচ্ছা?
নিশ্চিত। তুমি যখন অস্ত্র বের করার চেষ্টায় হাত বুলোবে পেটের তলে, দেখবে সেটা আর খুঁজে পাচ্ছ না। তখন আমি মিটি মিটি হাসব আর ধীর লয়ে উঠে চলে যাব তোমাকে বুড়বক
বানিয়ে…
তবে রাজসাক্ষী হও। অনেক ইয়ে পাবে, হাতি ঘোড়া রাজকন্যে অঙ্গরাজ্য … এই যে যাকিছু ভাবছ
বাছা, কোনওটাই তো তোমার নিজের ভাবনা নয়। সবই হয় কোথাও শুনেছ বা পড়েছ বা দেখেছ, এই
আরকি! তা, সেই ‘নিজের’ ভাবনা নিয়ে এত মারমুখী হবার আছেটা কী শুনি!
গৌতম পেয়েছিলেন, নিজের
ভাবনা? মানে, বুদ্ধ?
মনে হয়। নিশ্চয়ই। তা
নইলে আজও ওই পথে যাবার জন্য বুকে ইচ্ছে পোষে কেন মানুষ?
মিস্টার মজুমদার? নিজের
ভাবনা? পেয়েছিলেন?
না!
না?
না!!
লিস্ট দাও তো, আচ্ছা
লিস্ট দাও দেখি, কে কে নিজের ভাবনা পেয়েছে। তুমি নিশ্চয় ওরকম একখান বানিয়েছ এই
প্রাপ্তবয়সে...
আমাকে স্পেশাল ট্রেনিং
নিতে হয়েছে বাছাধন, এমনি এমনি ইউনিফর্মে একটা একটা করে তারা উঠে আসেনি হে ছোকরা!
আকাশ থেকে খসে পড়েনি!
জানি। আপনি রাজনৈতিক
কারণে প্রমোশন পেয়েছেন। জানেন, কোথায় গুটি কীভাবে সাজাতে হয়। তাই না?
হুঁ...। জানি বইকি। তা
তো জানিই। কিন্তু তুমি আবার হঠাৎ তুমি থেকে আপনিতে উঠে এলে যে?
কী সব তারা ফারা
দেখাচ্ছেন, ভাবলাম উঁচু মানুষকে উঁচুভাবেই সম্বোধন করা ভালো!
আচ্ছা, তোমাদের বক্তব্য
কী বলো তো? সশস্ত্র দিয়ে এই বর্তমান হাইটেক যুগে কী বাল ছিঁড়বে বলে আশা করো? আরে
পুতুল হয়ে নাচছো, বুঝতে আর কত মেধা লাগে রে ভাই?
স্যার, বললাম না, ভুল
হচ্ছে আপনাদের। আমি সেই লোক নই, যা আমাকে বানাচ্ছেন আপনারা, সত্যি! সুদুমুদু গু
ঘেঁটে মরছেন!
হাসালে হে ছোকরা। আগেই
বলেছি না, আমি নিশ্ছিদ্র? সব আঁট-ঘাট বেঁধে তবেই তোমাকে ছুঁয়েছি!
আবার ভাবুন স্যার। আমার
তাড়া নেই। আমার গায়ে যে ছাপ্পাটা সহজ ভাবে মেরে দেওয়া হয়েছে, তার অর্থ
আপনি আর আমি দুজনই বুঝছি।
যেমন? বোঝাও দিকি আমাকে।
ধরো আমি মুক্খু এক মানুষ!
তাই? বোঝাবো? কেন,
ডেঙ্গু ধামাচাপা দিতে অজানা জ্বর যেভাবে আসে, আর এসেও চারিদিক পালিশ করতে পারেনা,
তখন এইসব হিজিবিজি দাগিয়ে দিলে, ক্ষমতার লোকরা ভাবে বেশ বুঝি প্যাচআপ করা গেল...
তুমি বলছ, কোথাও তবে
সমস্যা নেই? এমনি ধরেছি তোমাকে? বুড়বক নাকি!
আছে। আছে। কিন্তু আমি তো
সে লোক নই, কোথাও যুক্ত নই আমি। আমি নিরাপদ, স্বাধীন, মঙ্গলকামী।
ওই যে, ‘স্বাধীন’
শব্দটার মধ্যে কেমন ইরিটেশন মেশালে?
স্বাধীন কথাটা অনিরাপদ
মনে হলো আপনার?
শব্দটা নয়, যেভাবে বললে
তুমি, সেটা। সেই বলাটা হে বাছা... ভাবো কী আমার কান নেই? উচ্চারণের তারতম্যে যে
তোলপাড় ঘটে তা আমার কাছে পৌঁছয় না?
দেখুন, স্বাধীনতা নিয়ে
যে দ্বিধার পরিধি আমার বোধে লেগে আছে, আজও, তা তো আসলে আবহমান জীবজগতের স্বার্থেই
–
সরকার তা মানবে কেন?
অ্যাঁ? বাছা হে? বলি দেশটা চালাতে আর পড়শি দেশের কোলাহল থেকে নির্ঝঞ্জাট রাখতে আর
আচ্ছে-খাশে দিনের সুবাতাস বওয়াতে হলে এই তোমার মতো সন্দেহবাতিক হারামিদের হাজতে
পোরার ইয়ে তো করতেই হয়, বন্দবস্ত! মিছিমিছি ইনোসেন্ট মাথাগুলোতে বাতিক ঢোকাতে তো
দেওয়া যায় না!
দেখুন স্যার, আমি সেরকম
ইচ্ছে নিয়ে এদিক সেদিক ঘুরছিও না। যে আনন্দে থাকতে চায়, থাকুক না।
অত ক্যারদানির বাক্যগঠন
যদি শিখলেই তুমি, সে তো আর ইয়ে থেকে আসেনি, আকাশ! বেশ বুঝতে পেরেছে আমাদের
ইন্টেলেকচুয়াল সেল, যে, এইরূপ কথাবিন্যাস কোন করিডোর বাহিত হয়ে কোথায় পৌঁছে আবার
কোন অভিমুখে যেতে চায়...
স্যার, হাসালেন মাইরি!
চাবকে পাছার ছাল ছারিয়ে
নিব রে নেড়িকুত্তা শালা হারামি বাঞ্চোত! এই আমার হাতের সিগারেটখানা শেষ হবার আগে
যদি সবকিছু না হেগেছিস, বলে রাখলাম তোর আঁতলেমি মারানো গাঁড়ে ঢুকিয়ে এমন কেস দিব
যে বাকি জীবন রাস্তায় বাটি হাতে বসে থাকবি!
এত কথা একসাথে বলতে হবে
না স্যার। মাঝে মাঝে সিগারেটে টান দিন। আর ছোট ছোট বাক্য বলুন প্লিজ। অত কথা
একসাথে আমিও মনে রাখতে পারব না...
বেশ, বল রে কুকুর,
কাশ্মীর নিয়ে নাকি কান্না কাঁদিস কেন?
প্রুফ দিন।
ওই বইটার
প্রচ্ছদ-পরিকল্পনা তুই করিস নি? রক্তমাখা শিশুমুখ? বই এর প্রচ্ছদে?
কোন বই?
কাশ্মীর নিয়ে তোদের
নাংমারানি সংগঠনের বইটা? মাদারচোদ!
দেখিনি। নামও শুনিনি
স্যার। মাঃ কালী বলছি!
কী? তোরা আবার মা কালীর
দিব্বি খাস নাকি? হাসালি তো বেশ...
আপনিও তো মাকে নিয়ে কী
একটা বললেন একটু আগে। আপনি পারেন তো আমি পারব
না কেন স্যার?
না, মানে, তোরা তো ইয়ে
বলে শুনেছি, নাস্তিক!
আচ্ছা স্যার আমাকে আপনি
বহুবচনে ডাকছেন কেন?
যেমন?
এই, ‘তুই’ না বলে বার
বার ‘তোরা’ বলছেন দেখছি!
এতে তো তোর গর্ব করার
কিছু নেই। বরং ঝিল্লি খাওয়া উচিৎ যে একটা দলাপাকানো ধারণার ভিতরে ফেলে দিয়ে কথা
বলা হবে যার সাথে, সে তার একক উচ্চারণের সুযোগ থেকে বরাবর বঞ্চিত হতে থাকবে আর
এইভাবে একটা সময় নিজের উপরেই ঘেন্না ধরে যাবে, তখন সে একা উঠে আসার চেষ্টা করবে,
যখন কিনা আমার কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে।
এমনকী, এটাও হতে পারে যে সেই একক মানুষটা এবার প্রকাশ্য ও গোপন যাবতীয় রহস্য ফাঁস
করে দিয়ে ভেউ ভেউ কেঁদে ভাতকাপড়ের দিকে নজর দিবে। দামি মোবাইল ফোন চাইবে; ক্রমে,
গাড়ি, বহুতল বাড়ি; আর প্রভূত অনিয়মের টাকা নানা খাতে বইয়ে দেবার ফিকিরে মজে যাবে
বাকি জীবনকাল।
[ছ্যার গো, অমল বারুইএর বেটা মোলো সে চেক হাতে বাসে
উঠল স্যার, আমার বেটার বডি কি হারিয়ে গেল ছ্যার? বডি না পেলি ট্যাকা হবেনি ছ্যার?
সে যে লাল জামা আর সাদা পাজামা পরে ঘর হতে বেরাইছিল ছ্যার, মিছা কইনা গো বাবু...]
স্যার, আপনার যা ভুঁড়ি
দেখছি, ম্যাডামকে ভালোবাসার সময় আগে তো ভুঁড়িতেই নাজেহাল হয়ে যান, বাকি অঙ্গ তো
কাছে যেতেই পারে না!
উঁহ্! ম্যাডাম, কে
ম্যাডাম?
মানে বউদি গো, আবার কে?
আপনার স্ত্রী...
আরে ধুর বাঁড়া, ওরও তো
এই বিশাল পেট মাইরি, চর্বি! আরে শুনেছি নাকি ইয়ে হয় আজকাল, চর্বি ড্রেইন করে ফিট
করা হয়?
হয়। ফোন নম্বর দিব? বাড়ি
গিয়ে জাপানি মেশিন দিয়ে এক্কেবারে শুষে নিবে। ছয়-সাতটা সিটিং দিলেই সাফ। হেব্বি
চনমন করবে মাইরি।
ভাগ! অত বুড়বক নাকি আমি।
কী করতে কী হয়। শালা এমন এক শয়তানকে পাঠাবি হয়তো, ভরদুপুরে ফিজিওর নাম করে এসে
দিলো ঠ্যা ঠ্যা ঠ্যা করে মনের সুখে পাইপগান চালিয়ে। যা তলে তলে হারামি তোরা।
মেনিমুখো, শালা!
হাসালেন গো স্যার।
আচ্ছা, জল খেতে পাব? কে দিবে? স্যার?
দ্যাখ, থার্ড ডিগ্রি যদি
সত্যিই চলতো, এখন তাহলে তোর মুখে মুতে দেওয়া হতো। বাঞ্চোত, জল চোদাচ্ছ? আগে হাগো
বাছাধন, যে, ‘প্রভাতী আলো’র সম্পাদক আসলে কে? যে নামটা ছাপা হয়, হারাধন খাঁড়া,
সেটা অলীক। বাস্তবে নেই। নে, বল্!
আচ্ছা তো, চাটুজ্জে,
বাঁড়ুজ্জে, মুকুজ্জে ছাড়া কি লেখক-সম্পাদক হতে নেই, নাকি! হারাধন তো হারধন! আপত্তি
কীসের শুনি? খাঁড়া তো খাঁড়া! অলীক হবে কেন? বা-লে-র ইন্টারোগেশন না আ-মা-র
ল্যা-উ-ড়া-র বা-ল! পেটে পা দিলে একটা ‘ক’ বেরোবে না, আর তখন থেকে বড্ড ফুটুনির
লেকচার শুনছি। হাতে ক্ষমতা আছে, বেশ শয়তানি করতে পারবে গুছিয়ে, জানি, তাই এত
হামবড়াই, না? গু খোর, শালা!
ও রে কাকাবাবু! পেয়েছি
বটে এবার। দাঁড়া, উপর মহলে ফোন করে এক্ষুনি তোর চোদ্দ গুষ্টির পুকটিতে সাইজ মাফিক
ঢুকিয়ে দেবার বন্দবস্ত করছি। তুইই? না? তুইই তো কবির বুট পালিশের ইয়ে-তোলা ছবি,
পা, সামাজিক মাধ্যমে দিয়েছিলি? না? ওরেস্সাবাশ! অ্যাঁ? ক্যারদানি মারানি ছোকরা!
বুঝলাম না কাকা...
বোঝোনি? ন্যাকা চিত্তির!
সুবোধ বালক সাজছো যে বড়!
এভাবে কি রেপ কেস সাজানো
যায়, বলুন দাদা?
কী? রেপ আবার এলো
কোত্থেকে বে? নেশা করলি নাকি?
যাঃ! সারাক্ষণ তো আপনার
চোখের সামনেই বসে-
মর্দানি, না? চাট্টি কব্তে
লেখেন বলে উনি সারা সমাজের ঠিকে-ঝি বুঝি? মন খুলে তবে তো পাদাও দায় বাপু, অ্যাঁ?
আচ্ছা মুশকিল তো। আরে ভাইপো হেসে-খেলে বাঁচতে শেখো, কতই বা এমন বয়স, বলো? কতো? মুখ
গোমড়া করে সারাবেলা কাটালে যে হৃদয়ে ক্যানসার বাধিয়ে বসবে বাবু! ...আরে ‘বিড়ি
জালাইলো’ বাজছে, ওদিকে গিয়ে খানিক নাচো, তা-আ-না, ইয়ে মারাচ্ছে! আর এ-বাদেও, দেখো,
ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার ওইদিকে নানা কথা উপহার দিচ্ছেন আর লোক উপচে পড়ছে সেথায়;
যাও বাছা, ওই দিকে যাও, চাট্টি নেচে নাও!
তুই গিয়ে নাচ না রে
ঢেমনা...
কী? আচ্ছা? এনকাউন্টার
করে দিব বলে রাখছি! এখনও সময় আছে, জিভ সামলে নে বাবুয়া!
তুই গিয়ে নাচ না রে
ঢেমনাচোদা...
কী? আচ্ছা? আবারও বলছি,
এনকাউন্টার করে দিব কিন্তু! সময় থাকতে সামলে নে ইয়ে, জিভ!
আচ্ছা থাক। আপনার আর
তেমন দোষ কী স্যার, বুঝি। সবই চাকরির জন্য করেন, জানি। কিন্তু মুশকিল কী জানেন?
না। জানিনা। বলো। শুনি।
গণতন্ত্র, আইন, মানবিকতা
ইত্যাদি শব্দগুলো আমরা সবাই শুধু কেতাবে পড়েছি বা কারো মুখ থেকে শুনেছি। মানে
বুঝিনা সেভাবে।
তাই? বেড়ে বুদ্ধি ধরছো
মাথায় তুমি একাই হে মহান আত্মা? হাঃ হাঃ হাঃ! সা আ আ আ লা! তুমি ছাড়া বাকিরা সব
ব্লান্ট? না? কেউ উঁচু জাগায় গেলে, ক্ষমতা উপভোগ করলে তাকে গালাগালি দিতে হবে, না?
সা আ আ আ আ আ লাহ্ !
আঙুল তো ক্ষমতাবানের
দিকেই তুলতে হয়। রাজার দিকেই তুলতে হয়। এটাই দস্তুর কাকা! স্ট্যাবলিশমেন্ট কথাটার
অনেক মানে আর মাত্রা আছে, জানেন তো? প্রকৃত কবি সদাই ক্ষমতার বিপক্ষে থাকে। সে, পা
চাটে না।
ক্ষমতার কাছে থাকা মানেই
ইয়ে,পা চাটা?
এক্কেবারে। নইলে ক্ষমতা
তো কবিকে কাছে থাকতেই দেবে না। তাকে রাজসভায় রেখে পাঁচালি লেখাবে... রাজার নামে
পুজো আদায় করাবে... তার ভাবমূর্তি কাজে লাগিয়ে ইয়ে করবে, ব্রেন-ওয়াশ, পাবলিকের!
এই শালা, ‘ইয়ে’
মুদ্রাদোষটা আমার কাছ থেকে চুরি করে বললি বেটা, না?
আরে ওটা বলে তো তোমাকে
প্যাঁক দিলাম স্যার, বুঝলে না?
ভারি মজা? না? পেয়েছ
বাঁড়া আমার মতো সদাশিব ইন্সপেক্টর, তাই এত রগড় করতে পারছ, অন্য কেউ হলে গাঁড় মেরে
ছেড়ে দিত এতক্ষণে!
যাই বলুন, আমি সেই লোক
কোনও দিনও ছিলাম না, এখনও নই আর ভবিষ্যতেও হবো না। একজন ভুল মানুষকে ভুল জাগায় ভুল
চরিত্রে বসাচ্ছেন গো আপনারা। বড্ড বাজে রকমের এরর থেকে যাচ্ছে ব্যাপারটায়। কী
গবেষণা করবে, ভবিষ্যতে, বাচ্চাকাচ্চারা, বলুন?
শোন, প্রভুর পা ওভাবেই
যুগে যুগে, কালে কালে নাচার দাসেদের পেট ও মেধা বরাবর, আত্মসম্মান আর অস্তিত্ব
বরাবর, নির্মম-নির্লজ্জ-অবিবেকশীল গতানুগতিকতায় এগিয়ে আসে আর স্থায়ী হয়ে থাকতে
চায়। এ এমন নতুন কিচ্ছু নয়। মিছে কলরব করলে ক্যারিয়ারে পারমানেন্ট কালি দেগে দেওয়া
হবে। মারিয়ে খাবি বাকি জীবন আর নাকি-কান্না কাঁদবি।
স্যার...স্যার...বলি ও
দাদা...কাকু! আমি কেমন অন্ধকার দেখচি গো...ও স্যার...
যাঃ তেরিকে! বেহুঁশ হয়ে
গেলি নাকি বে? ওই ছোকরা দিনবদলের বিচি? এই!
অ্যাঁ...স্যার...
তাকা, চোখ মেলে তাকা বাঁড়া,
শেষে মানবাধিকারের ঘানি টানাবি নাকি...কথা বল...
স্যার...আমি কোথায়...
আবে ইয়েতে, না সেটা ফাঁস
করা যাবেনা, তবে নিরাপদে আছিস। দেখ বাবা মরে টরে যাসনে আবার...
স্যার...
বলি বেঁচে আছিস?
উঁ...
নাটক মারাচ্ছ না তো
শালা? চোখ মেলে চা একবার দেখি!
হুঁ...
এখন অনুপ্রেরণা পাচ্ছিস? জ্ঞান আসছে? বুকে বাতাস
ঢুকছে কি?
না...
অনুপ্রেরণা?
কী?
আরে, অনুপ্রেরণা? বুকে অনুপ্রেরণা
পাচ্ছ খোকা?
তা পাচ্ছি একটু যেন...
এই তো। ওতেই হবে। অনুপ্রেরণা
বলে কথা। লাইনে এসো বাবা। পেটে ভাতের যোগাড় নেই এদিকে স্থাপত্যের বিপরীতে হাঁটতে শখ,
হয় নাকি! নাও গুরু, এবার রাজসাক্ষী হও। অনেক ইয়ে পাবে, হাতি ঘোড়া রাজকন্যে অঙ্গরাজ্য … এই যে যাকিছু ভাবছ বাছা, কোনওটাই তো তোমার নিজের ভাবনা নয়। সবই হয় কোথাও
শুনেছ বা পড়েছ বা দেখেছ, এই আরকি! তা, সেই ‘নিজের’ ভাবনা নিয়ে এত মারমুখী হবার
আছেটা কী শুনি!
[বেটা-মরা চেক হাতে পেতে হলে বডি আগে ছনাক্ত হতি হয়,
না ছ্যার? তা আমি বডি কোতা পাই গো বাবু... ও ছ্যার, বডিও কি আমারেই খুঁজি আনতি
লাগবে? দু-চার ট্যাকা লেন-দেন করে বিষয়টার রফা কি হবে না গো? কত তো কাণ্ড হয় শুনি
আর এইটুক হবেনি! ]
অনবদ্য দাদা
ReplyDeleteশুধু অনবদ্য, অসাধারণ বলে লেখকের অতৃপ্তির কারণ হবো না। বর্তমান সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের নিরিখে জ্বলন্ত চাটুকারিতার বিশ্বস্ত দলিল।ভাষা সাধারণ অথচ শক্তিশালী ও সংযত।আলাপচারিতা আর একটু দীর্ঘ হলে মন্দ হতো না।শুভেচ্ছা রইল ।
ReplyDeleteপরের লেখার জন্য অপেক্ষায় রইলাম ।
ReplyDelete