সী-মুন
রোলিং
... ক্যামেরা ...এন্ড ....অ্যাকশন...৷
আলতো
করে মিশকার ঠোঁটে ঠোঁট রাখে ত্রিদ ৷ চোখ বন্ধ
৷ মিশকার নাকের তলায় দানা দানা ঘাম ৷ শিরশিরে আহ্লাদ আদুরে জায়গা জায়গায় ৷
শট্
পারফেক্ট হওয়া চাইই ৷ ত্রিদ জিভটা মিশকার মুখের ভেতর ঢোকায় ৷ গরম পারদ ৷ ত্রিদের
জিভ ঠান্ডা, কেমন আড়ষ্ট.... কিন্তু সেই পুরনো স্বাদ — ত্রিদের কোরক গুলো জ্যান্ত
হয়ে মিশকার মুখের ভেতর সেঁচে নেয়....
—
কাট্ ৷ পরিচালক ডেনিম্ এগিয়ে আসে, —পারফেক্ট মিশকা ৷ ত্রিদ স্মুচিং টা জাস্ট বন্য
হয়েছে বস্ ৷ শুধু তোমার নাকটা মিশকার নাকে গার্ড হয়ে গেছিল ৷ সেটা বড় ইস্যু নয় ৷
আফটার অল্ তোমাদের পাস্ট কেমিষ্ট্রি তো ডিনাই করা যায় না ! সেটাই কাজে দিলো ৷
মুচকি
হেসে চোখ মারে ডেনিম, ত্রিদ দাঁত পিষে মুখ পাথর করে রেখেছে কটমট করে মিশকা ডেনিমের
দিকে চায়
—
ব্রেক নিলাম ঘন্টা খানেক ৷ গলা খাঁকড়ে ডেনিম বলে, কস্টিউম চেঞ্জ করে নাও মিশকার এই শটটায় স্যুইমিং পুলে বিকিনি ক্যারি করতে হবে ৷ পুলের এই
সিনটা মোস্ট ইম্পরট্যান্ট ৷ তোমরা জলে ফোর প্লে-র প্লেজারে
আছো, সেই অ্যাক্টের ন্যাচরাল ফ্লেভার চাই ৷ ওকে গাইজ, তোমরা রেডি হও , ফাটিয়ে দিতে হবে কিন্তু ৷ ওহ্ গড ,
সবশেষে সী- মুন কন্ডোম তোমরাই তাহলে রিপ্রেজেন্ট করলে! তোমাদের অ্যাপিয়্যারেন্সে
প্রোডাক্ট সেল্ এবার তবে অবৈধ হিউম্যান প্রোডাক্ট কমিয়ে দেবে , কি বলো, অ্যাঁ !
... ওয়্ সুনীত স্ট্রবেরি ডেলিভারি হয়েছে তো... ৷ মাইক্রোফোনে নির্দেশ দেওয়ার নামে
অন্যদিকে সরে পড়ে ডেনিম
মিশকার
ঠোঁটের রং ঘনচুম্বনেও ওঠেনি ৷ ত্রিদ খালি গায়ে একটা তোয়ালে চাপিয়ে নেয় ৷ সন্ধে
নামছে , ঠান্ডাও বাড়বে ৷ কে জানে পুলের জল সিন নেওয়ার সময় গরম করা হবে কিনা ৷
মুম্বই-এ রাতের দিকে এই সময়টায় ঠান্ডার প্রলেপ পরা শুরু হয়ে যায় ৷
ত্রিদের
ম্রিয়মান ভাব আড়চোখে লক্ষ করা মাত্রই তাচ্ছিল্যের হাসি মুখের পেশীতে ফুটে ওঠে
মিশকার ৷
—
শেষমেশ এই অবস্থা, জন্মনিরোধক বিজ্ঞাপণের মডেলের ভূমিকায় ত্রিদ! ফেমাস টপ্ গ্রেডেড
মডেল ত্রিদ! এই মিশকা না হয় সুলভ শৌচালয় বনে গ্যাছে ৷
খোঁচা
খাওয়া এই প্রফেশনের বড় দিক, সামলে নিতেই হয় ৷
—
"তুমি এই প্রজেক্টে আছো জানলে বন্ড সাইন আমি করতাম না ৷ ডেনিম চিট্ মি,
ড্যাম ব্লাডি..
চিবিয়ে চিবিয়ে কথাগুলো বলে ত্রিদ ৷ তার পুরো রাগটা এখন ডেনিমের ওপর
৷ গত মাসে এই শ্যুটের অফার পায় ডেনিমের মারফত, তখনও সে জানত না তার শ্যুটিং এ পার্টনার মিশকা! মোমেন্টামের কন্ট্রাক্ট শেষ, চার্লিফক্স ডীল করেও তাকে আর কভারপেজে জায়গা দেয়নি, তার বদলে যে সিলেক্টেড, সেই মিথিল যোশি নিউকামার উঠতি
মডেল হিসাবে এখনই জায়গা পাওয়া শুরু করে দিয়েছে ৷ চোখে চোয়ালে তীব্র ধার, কার্লি
হেয়ার, সারা মাথাটা যেন চুল ভর্তি ডিজাইনড
বনসাই ,গাল দুটো ভাঙা , কচি মেয়েদের হার্টথ্রব এই মিথিল ওরফে মিথাইলের-ই নামের আগে হয়তো 'নেশান্স সেক্সিয়েস্ট ম্যান 2018' তকমাটা জুটবে।
আর ত্রিদ!!...অপদার্থ, বঞ্চিত ত্রিদ!! ওই শালা চার্লিফক্সের কভার শ্যুটের জন্য
-মিডলাইট , নেভারকাম, গ্যালিবিয়ান গিমিক সব কটা ফ্যাশন ম্যাগাজিনের অফার ছেড়ে দিল
৷ চার্লির সি.ই.ও শিবরাজ তাকে পুরো
ধাপ্পা মেরে এমন অবস্থায় ফেলে দেয় জাস্ট পথে বসাটাই বাকী ছিল ওর ৷ ভুরি ভুরি
প্রতিশ্রুতি দেওয়া হারামখোরটাকে একবার যদি হাতের নাগালে পেত ত্রিদ...
হাত
মুঠো হয়ে আসে; মাদারফাকারটা এখন স্পেনে নাকি ট্যুরে গেছে, দিক ষাঁড়ে গুঁতিয়ে
শালাটার, খেলা দ্যাখা হলুদ সুতো হয়ে বের হোক।
এক সময়ের সবথেকে বেশী
পারিশ্রমিক নেওয়া সেলেব মডেলের ফোনটাও আজকাল আর তেমন বেজে ওঠে না দামি অফার
রিকোয়েস্টের সাথে।
—
কি ভাবছো ত্রিদ? চিন্তায় ছেদ টানে মিশকার
—
হুম্ ভাবছি। ত্রিদের চোখ জ্বলছে, পেঁয়াজ কাটার জ্বলুনি
—
তা কি ভাবা চলছে
—
নিজের লাক্
— আই থিঙ্ক লিপ্ লকিং সিনটা টু মাচ,কোনো ন্যাশনাল লেভেলের কাজ এরকম আগে হয়নি ৷
কথার প্রসঙ্গ বদলে মার্লবোরোর প্যাকেট
বের করে ধরায় মিশকা,ইউরোপ কান্ট্রির মেকিং গুলো এতটা ইন্টেমেসি লেভেলে যায় জানি
—
ডেনিম হয়তো পুরো ব্যাপারটাকে চরম ইরোটিক্ করে ছাড়বে , সেন্সর কাঁচি চালাবেই , ইসস্ এতদিন পর তোমার মতন রূপমঞ্জরীর গলায় নাক , ঠোঁট ছোঁয়াতে পারলাম , দর্শক সেটা দেখতে পাবে না !
দীর্ঘশ্বাস ফেলে ত্রিদ...
ত্রিদের কথার রহস্য ধরতে পারার মতন বুদ্ধি আছে মিশকার ৷ ত্যারছা
ভাবে ত্রিদকে জরিপ করে পোষাক চেঞ্জ করতে নিজের ও.ভি. ভ্যানে হাঁটা লাগায় ৷
—
আক্কেল দাঁতটা কবে তুললে ৷
পেছন
থেকে বলে ত্রিদ ৷ মিশকা দাঁড়িয়ে যায় , যুগপৎ অবাক এবং আশ্চর্য, এটাতো ত্রিদের
জানার কথা নয়!!
—
" হাউ ডু য়্যু নোউ?"
—
অভ্যাসমতন জিভ চলে গ্যাছিল।
মিশকার
দুধসাদা গায়ে সিঁদুর ছিটিয়ে দিল যেন কেউ। গা পিত্তির জ্বলে ওঠে তার।
— জাস্ট পারভার্ট। বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দিলে কেমন দেখলে তো!
মিশকার
রাগের পারদ চড়ে গেলে থামানো ওকে মুস্কিল, ত্রিদ চটপট আবহাওয়া ফেরাতে হাতটা চেপে
ধরে ওর — ওফ্ ! ক্ষেপছো ক্যানো , আই জাস্ট জোকিং উইদ য়্যু , শোনো মিশকা.....
এক
ঝাপটায় হাত সরিয়ে বাকী কথা আর শেষ করতে দেয় না ত্রিদকে মিশকা।
—শোনো
ত্রিদ, রিলেশন যো টুঁট গ্যায়া তাতে চুইংগাম দিলেও জোড়া লাগবে না, চেষ্টাও
করোনা, ফালতু ফ্লার্ট তোমার কাজে দেবে না বলছি কিন্তু ...
—
তুমি না আগের মতন ব্লন্ডি রয়ে গেছ জানো তো !
থতমত
খেয়ে গেল হঠাতই মিশকা ৷ এত ধ্যাতানি দেওয়ার পরও ভাবতে পারেনি ত্রিদের এই রিয়্যাকশন!
ঝট
করে রাগটা গলে যায় ৷ হেসে ফেলে
পাশের
চেয়ারটায় নিজে থেকে বসে, বলে
— আগের মতো তুমিও তো দিব্যি রয়ে গেলে ! খেলাচ্ছলে উত্তর দিতে গিয়েও মুখের কথা
মুখেই রয়ে যায় ত্রিদের ৷ মিশকার ঘুমঘোর চোখ , তার ভাষা সেই পুরনো আদিম নৈশ মাদকতা
৷ সে ভীষণ জটিল ভাষা,নারীই একমাত্র প্রকৃতির দানে তা রপ্ত করেছে ৷ ত্রিদের গা
শিউরে ওঠে ওই চোখ দেখে , যেন মার্জার চাহনি, ধ্বক ধ্বকে শিকার হারানো ৷ বুকের
চামড়া , শিষ্ণাগ্র কতবার ছড়ে - ছেঁচড়ে গেছে, মিশকার এমনতর লোভী, খিদে খিদে চোখ যখন
তার পিট্যুইটারিকে বাধ্য করেছে নিজেকে আবরণহীন করায় !
ঘামতে
শুরু করে ত্রিদ৷ বাঁধনহারা রঙিন আবেদন যেন দু'জোড়া আঁখিপটে নির্নিমেষ স্থিরতায়
প্রস্তুতি নিতে থাকে৷ স্পটের সেট, লাইট সব ছয় বছর আগেকার কলকাতায় 'লাইট এন্ড
শ্যাডো' স্টুডিও র ভেতরের আলো-আধাঁরিতে ডুবে আসে...পিচ গলা দুপুর...খয়েরী
লিপস্টিক....
কড়া
পারফিউম....প্রথম পোর্টফোলিও... অডি কার ....ভেসে ওঠে ৷.... দূরত্বতার অস্বচ্ছ
পর্দা ক্রমশ সরে যায় ...স্মৃতির প্রজেক্টরে সব কিছু ত্রিদ মিশকার চোখে দেখতে
পায়...সওওব— মিশকাও....
(২)
ত্রিদিব
বারাসাত থেকে লাইট অ্যান্ড শ্যাডো স্টুডিওয় এসেছিল পোর্টফোলিও করাতে, কিছুই না
বিভিন্ন টি.ভি চ্যানেলে বাংলা সিরিয়াল মেগায় যদি কোনো রোল পাওয়া যায়৷ গ্রুপ
থিয়েটার তো নয় নয় করে বেশ কিছুদিন চললো ৷ তখনও অবশ্য ত্রিদিব ত্রিদ হয়ে উঠতে
পারেনি.... ৷ পোর্টফোলিওর সম্বল—পিঠ ব্যাগের দুটো জিন্স, দুটো টি-শার্ট আর
শিয়ালদা ষ্টেশনের মুখ থেকে কেনা দেড়শো টাকার সানগ্লাস ৷ নিয়মমাফিক
ফটোগ্রাফার মুখে স্পঞ্জ করে পাউডার ঘষে দেন, চুলটা নিজেই ভিজিয়ে হেয়ারজেল লাগিয়ে আঁচড়ে নিল ত্রিদিব আয়নার সামনে৷ বিভিন্ন পোজের ফটো দায়সারা ভাবে উঠতে থাকে ৷ আলো মেরেছে দু'দিকে দু'টো , রিফ্লেকটর থাকা সত্ত্বেও ব্যবহার করা হলো না ৷
তাড়াহুড়ো করে দশ মিনিটের মধ্যে কাজ নামিয়ে ফেললেন অলকদা ৷
—ওকে
৷ হয়ে গেছে চব্বিশ তারিখ নাগাদ এসো,পেয়ে যাবে৷ দু'হাজার এখন দিচ্ছ তো , বাকী দুই
ওদিনই দিও না হয় ৷
ত্রিদিব
ব্যাগ থেকে টাকা বার করে অলকদার হাতে দেয় ৷
—
আর ক'টা তুললে হত না দাদা?
—এসব
বিষয়ে আইডিয়া নেই যখন, ভাট বকো না ৷ স্পষ্ট বলে দেন অলোক দা'
বেরিয়ে
আসে ত্রিদিব ৷ ফুটে নামতেই একটা দামী গাড়ি স্টুডিওর সামনে থামে, ত্রিদিব
দাঁড়িয়ে যায়৷ নেমে আসে এক উগ্র রূপসী তনয়া ৷ পাশ কাটিয়ে ঢুকে পড়ে স্টুডিওয় ৷ অজানা
এক কৌতূহল বাড়াবাড়ি রকমের পেয়ে বসে ত্রিদিবের ৷ অলকদার ফটো তোলার সময়ে ছটফটানি
সাথে মেয়েটার এই মুহূর্তে আসা— একটা কিছু যোগসূত্র আছেই৷ ভেতরে আবার ত্রিদিব ঢুকে
পড়ে ৷ ভেজিয়ে রাখা দরজায় উঁকি দিতেই মালুম হয় তার সব ৷ এই তন্বীর ছবি তুললে ষাট
হাজারের মওকা, ত্রিদ কি আর পাত্তা পায় ! মেকাপ কিট্, ডিজাইনড ড্রেস, হরেককিসিমের
অরনামেন্টস বার করতে লাগেন এতক্ষণে অলকদা ৷ তার নিজের কাজটাই কেবল জৌলুষহীন হল ৷
এত টাকা যে তার নেই!
মাথা
নীচু করে স্টুডিওর বাইরে পা ফ্যালে ত্রিদিব ৷ ভর বৈশাখের পিচের রাস্তা টগবগিয়ে
ফুটছে ৷
(৩)
ঠিক
ডেটেই ফটো হাতে পেয়ে যায় ত্রিদিব ৷ যা আশা করেছিল তার বিন্দুমাত্র হয়নি, ফটোশপের
কাজে তাড়াহুড়োয় দৈন্যতা ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টা ৷ টাকাটা গচ্চা গেল আর কি !
—"হাই৷" পেছন
ফিরে দেখে গত দিনের সেই মেয়েটা ৷
—অ্যাম
শিখা, বড্ড সেকেলে নাম, না? তুমি আমায় বরং মিশকা বলে ডেকো ৷
প্রথম
আলাপে 'তুমি', একটু ধাক্কা খেল ত্রিদিব ৷
—
না না, তা নয় ৷ আপনিই তো সেদিন এসেছিলেন ?
—
প্লিজ বেবি, আপনি না, তুমি ৷
এবার
বড়সড় ধাক্কা 'বেবি'! আদুরে গলায়
'বেবি'!!!
—
সো', তোমার নাম ?
—
ত্রিদিব সেন৷ গলা কোনোরকমে মিনমিনিয়ে ওঠে
—তোমার
পিক্সগুলো দেখলাম ত্রিদিব, কি হ্যান্ডু লাগছো আমি টোটালি ফিদা, বিলিভ্ মি ৷
ঘাড়-মাথা
এক করে দাঁড়িয়ে থাকে ত্রিদিব , তাকে নাকি হ্যান্ডসাম লাগছে ! ধরণী দ্বিধা হও!!!
—ফ্রম
নাও উই আর ফ্রেইন্ড, লেট'স গো৷
হাতে
টান মেরে গাড়ির দিকে নিয়ে যায়, ত্রিদিব ভয় খেয়ে গেছে , উঠবেই না ৷ শেষে ঠেলে
ধাক্কে ওঠানোর পর, ড্রাইভারকে কফিশপ ক্যাফেচিনো যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে কানে হেডফোন
গোঁজে মিশকা ৷
(৪)
উফ্ কি অবস্থা তখন তোমার! হাসির দমকে দমকে এলিয়ে পড়তে থাকে মিশকা, যখন তোমায় কফিশপে না নিয়ে গিয়ে সোজা মহেন্দ্র রাও কাছে হাজির, মুখ ততক্ষণে তোমার পাংশু মেরে গ্যাছে...গড! কি ইনোসেন্ট ছিলে তুমি!
উফ্ কি অবস্থা তখন তোমার! হাসির দমকে দমকে এলিয়ে পড়তে থাকে মিশকা, যখন তোমায় কফিশপে না নিয়ে গিয়ে সোজা মহেন্দ্র রাও কাছে হাজির, মুখ ততক্ষণে তোমার পাংশু মেরে গ্যাছে...গড! কি ইনোসেন্ট ছিলে তুমি!
গলায়
সিগ্রেটের ধোঁয়া আটকে গেছে, কেশে যেতে যেতেই হাসতে থাকে মিশকা, অনেকদিন বাদে মিশকা
হাসছে! প্রাণ খুলে! স্বভাবসিদ্ধ সেই পুরনো হাসি ৷ ডেনিম এর মধ্যে খবরদারি করতে
অাসে ৷ সময় বেশী নেই আর, পুলের জল গরম করার প্রসেস শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে ৷ডেনিম
দৃশ্য বোঝাতে থাকে— বিকিনি পরিহিতা অবস্থায় পুলে নামবে মিশকা , মেরুন শর্ট জিন্সে
ধীরে ধীরে ত্রিদ ৷ তারপর চূড়ান্ত ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত দুজনের ৷ ক্রেন ক্যামেরা ওপর থেকে
নেমে আসবে নীচে , দুজনের একদম কাছে — ফ্রিজ শট্। দুজনের তুলে ধরা কামার্ত
শৃঙ্গার যাতে তারিয়ে তারিয়ে দর্শক অনুভব করতে পারে, তার কোনো খামতি রাখবে না ডেনিম
৷ মিশকা কনডোম স্ট্রিপ যখন আলতো ভাবে ত্রিদের কপালে ঠেকিয়ে সুড়সুড়ি দেওয়ার ঢং-এ
ঠোঁট অবধি নিয়ে আসবে, তখন কোন পজিশনে ক্যামেরা থাকবে সেই নিয়ে আলোচনায়
ব্যস্ত হয়ে পড়ে ডেনিম সিনেমাটোগ্রাফারের সাথে৷
— রাও
হল পাক্কা ঘুঘু ৷ তোমার কথা ফেলতে পারেনি, জহুরির মতন ক্যাটক্যাটে চোখে
দেখছিল আমায়।
— আমি
নিয়ে না গ্যালে তো বিড়ালের ভাগ্যে শিকে ছিড়তো না ৷ কপট রাগের ছলে বলে মিশকা
— দ্যাট'স
ট্রু ডার্লিং, রাও যখন বললো লেভিস্কো ফ্যাশন উইকে রাম্পে নামার জন্য,আমার পায়ের
মাটি সরে গ্যাছে৷
— তোমার
ডান পা'টা আমিও জুতোর হিল দিয়ে চেপে রেখেছি, যাতে দৌড় না দাও ৷
— পালানোর
সাহস কই তখন! রাও এর বডিগার্ড দাঁড়িয়ে, যদি চেপে ধরতো? ত্রিদ হেসে ফেলে
সিগ্রেট ধরায় মিশকা, ধোঁয়ার শেকল্ ছেড়ে বলতে
থাকে,
—
তারপর ছয় মাস গ্রুমিং, মেকওভার আর তুমি পুরোপুরি চেঞ্জ ৷ লেভিস্কো ফ্যাশন উইকে
দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স, ত্রিদিব থেকে এক্কেবারে ত্রিদ৷
—কিন্তু
রাও একবারের দেখায় আমায় কেন বাছলো, এটাই অামি বুঝলাম না এখনো!
—তুমি
এখনো বুদ্ধু আছো ত্রিদ ৷ রাও গে' ইয়ার! তোমায় দেখে ও পুরো আউট ৷ তুমি জানো কতদিন আমার
কাছে বায়নাক্কা করে বলেছে— ত্রিদকে আসতে বলো না আমার অ্যাপার্টমেন্টে, আই ফিল এলোন
মিশকা ৷
—
ওহ্, শিট্৷ মুখ কুঁচকে যায় ত্রিদের, চুল মুঠো করে নিজের ঘাড় নাড়িয়ে বলে, একটা হোমোসেক্সুয়ালের দয়ায় আমার স্টার্টিং হলো
তবে!
—
নো নো, লিসেন ড্যুড, ফার্স্ট লুকেই রাও বুঝে গেছে তুমি লম্বা রেসের ঘোড়া ৷ ওর চোখ
বিষাক্ত ৷ না'হলে নর্মাল ডে-লাইটে কেউ কারোর ফেসকাটিং আর জ্' দেখে স্কেচ করে নিতে পারে
আফটার মেক-ওভার লুক! রাও আমার ওপর ভরসা করেছিল ইভেন্টটার জন্য, হোক না সেটা স্মল
ইভেন্ট৷ বাট আই ক্যান ফুলফিল দ্য ট্রাস্ট অব রাও টু প্রেজেন্ট য়্যু ৷
উঠে
দাঁড়ায় ত্রিদ চেয়ার থেকে ৷ কেমন যেন গম্ভীর ভাব
—
আমি ড্রিঙ্কস নেবো এখন, তুমি চেঞ্জ করে এসো ৷
—এই,
বসো না ডিয়ার ৷ টেনে বসায় ত্রিদকে মিশকা, তুমি আমায় এখনো বুঝলেনা!
—
উফ্, এতে বোঝাবুঝির কি আছে…! বিরক্ত হয়ে মিশকার দিকে তাকাতে গিয়ে ত্রিদ হতবাক,চোখে
জল ,এই প্রথম মিশকার চোখে জল দেখল ত্রিদ ! নিজের মধ্যে অসহ্য ব্যথা ছড়িয়ে পড়ছে ৷
অনুতাপ কি তবে এই!
—"ওহ্
সুইট, কাঁদছো কেনো আর না...সব ঠিক হয়ে যাবে, জল মোছ এখনই ৷ জড়িয়ে ধরে মিশকাকে পরম
স্নেহে, চোখ মুছিয়ে দেয় ৷ মনটা হু হু করে ওঠে ত্রিদের ৷ তার আজকের সাফল্যে কতটা
অবদান মেয়েটার, সে ভুলতে বসেছিল প্রায় ৷ মিশকা না থাকলে কোথায় আজকের ত্রিদ ! বারাসাতের
ত্রিদিব সিরিয়ালের জুনিয়র আর্টিস্ট হয়েই পড়ে থাকতো ৷ মিশকার দুর্বলতা ছিল একমাত্র
ওইই৷ জিমভ্যানো ডিস্কে যেভাবে, মদের নেশায় চুর হয়ে চুমু খেতে খেতে মিশকা তার
ব্লেজার ধরে কৌচে শুয়ে দিল জোর করে......চারদিকে ফ্ল্যাশের তীব্রতা, উল্লসিত সব
গেস্ট ,বিকট সিটি মারছিল সব...কুৎসিত মন্তব্য, এরপর থেকেই পি.আর. ডাউন হতে থাকে
ত্রিদের৷ তার কেরিয়ার নিয়ে ছেলেখেলা শুরু করেছিল যেন মিশকা ৷ ত্রিদের সমালোচনা কোনো
এক কাগজে করায়, সেই রিপোর্টারের গায়ে থুতু ছিটানোর মতন কাজ করতেও দ্বিধাবোধ হয়নি
মিশকার ! মিশকার একগুঁয়েমি, পাগলাটে স্বভাব ত্রিদের গুডউইল ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে
পারত, রিস্ক নেয়নি ত্রিদ ৷ অ্যাভোয়েড করতে থাকে মিশকাকে ৷ ত্রিদের ভালবাসার অভাব
ছিল না মিশকার জন্য ৷ কিন্তু মিশকার অপরিপক্কতার দায় সে আর নিতে পারেনি ৷ সম্পর্কে
ছেদ পড়েছে, আলাদা হয়েছে দুজনে ৷ আর তা' ত্রিদের পক্ষে তখন হয়তো দরকারও ছিল ৷
নাহ্,আর
নাহ্, মান-অভিমান সব ধুয়ে মুছে যাক ৷ ত্রিদ তাকায় মিশকার দিকে, প্রগাঢ় কন্ঠে বলে—
বোল্ড রিলেশন ফিরে পেতে হলে শট্-টাও বোল্ড হওয়া চাই ৷ কি, পারবে তো?
মিশকা
মুখ তোলে, পরক্ষণেই মুখ গুঁজে দেয় ত্রিদের বুকে ৷
(৫)
রোলিং...ক্যামেরা...অ্যাকশন
পুলে
উষ্ণতার বাষ্প...সবুজ কটিবস্ত্রে নাভি জলে মিশকা ... ত্রিদ ঢেউ কেটে মিশকাকে ছুঁয়ে
ফেলে...কানের লতিতে দংশন...একহাত মিশকার কোমর আঁকড়ানো ....নীল সমুদ্র সদৃশ জলাধারে
ঘন হয় লবণসুখ ....আইসকিউব মিশকার ক্লিভেজে চেপে ধরে ত্রিদ...মেয়েলী আঙুল কোমরের
আরো নীচে আকর্ষর মতন নেমে যেতে থাকে… নাকে নাক দিলবালে খুনসুটি...গোলাপ পাপড়ি
ঢাকা দ্যোদুল অস্তরাগ ...মিশকার গোপন অনুভূতিরা ঠেলে হিঁচড়ে জাগতে চায়
আবার...নির্দিষ্ট অঙ্গ দৃঢ় হয়ে ওঠে ত্রিদের...ক্যামেরা নেমে আসে ওপর থেকে দু'জনের
পারস্পরিক রসায়নের একমাত্র জিম্মাদার ....জিঙ্গল সাথে ভয়েস ওভার ভেসে ওঠে.......
খুব ভালো লেগেছে।
ReplyDeleteধন্যবাদ রঙ্গন
ReplyDelete